১.সমাজবিজ্ঞান কী?
সমাজবিজ্ঞান হলাে সমাজের বিজ্ঞানভিত্তিক অধ্যয়ন বা পাঠ। সমাজে সংঘবদ্ধ মানুষের জীবনযাপন প্রণালি,গতিপ্রকৃতি, মানব আচরণ, সামাজিক সম্পর্ক, নানাবিধ সংঘ অনুষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান, পরিবর্তন, ব্যাপ্তি ইত্যাদিসহ সমাজের সার্বিক বিষয়ে আলােচনা করে সমাজবিজ্ঞান। সমাজবিজ্ঞানের প্রকৃতি পরিধি ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞানার্জন অত্যন্ত জরুরি। সমাজবিজ্ঞানের প্রকৃতি ও পরিধিগত জ্ঞানলাভই কেবল সমাজবিজ্ঞানকে সঠিকভাবে জানতে সাহায্য করবে।
২.সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি?
সমাজ ও সমাজের মানুষ নিয়ে যে বিজ্ঞান
আলােচনা করে তাই সমাজবিজ্ঞান। সমাজবিজ্ঞান সমাজ সম্পর্কিত প্রত্যেকটা বিষয় নিয়ে আলােচনা করে। বর্তমান প্রতিষ্ঠিত সমাজবিজ্ঞান একদিনে প্রতিষ্ঠা লাভ করেনি; বরং সমাজবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠায় রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। মূলত অগাস্ট কোঁৎকে সমাজবিজ্ঞানের জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা হলেও সমাজবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠায় অন্যান্য অনেক দার্শনিক ও সমাজ তাত্ত্বিকদের অবদান অনম্বীকার্য।
সমাজবিজ্ঞান সামাজিক মানুষের কল্যাণসাধনের নিমিত্তে পরিচালিত এক বিজ্ঞান। সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশে অগাস্ট কোৎ এর অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । তিনিই 'Sociology' শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন। সমাজবিজ্ঞানকে একটি পূর্ণাঙ্গ সামাজিক বিজ্ঞান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে অগাস্ট কোৎই সর্বপ্রথম ভিত্তি স্থাপন করেন। তিনি
১৮৩০ সাল থেকে ১৮৪২ সালের মধ্যে 'Positive Philosophy' গ্রন্থ রচনা করে ছয় খণ্ডে প্রকাশ করেন যা সমাজবিজ্ঞানের ভিত্তি হিসেবে সর্বত্র গ্রহণীয়। তাই বলা যায়, সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি ও বিকাশে অগাস্ট কোৎ এর অবদান অনম্বীকার্য।
৪.সমাজবিজ্ঞানে হার্বার্ট স্পেন্সারের অবদান?
সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের
ইতিহাসে হার্বার্ট স্পেন্সারের অবদান অতুলনীয়। তার নিরলস সাধনা তাকে শ্রদ্ধার আসনে বসিয়েছে। জ্ঞানের একটি শাখা হিসেবে সমাজবিজ্ঞান বিষয়টিকে হার্বার্ট স্পেন্সার ফ্রান্সে ভিত্তি স্থাপন করেন। কারণ সেখানে সামাজিক দ্বন্দ্ব প্রকট ছিল এবং ফ্রান্সে বিপ্লবের পর যে সমস্যার মুখােমুখি হয়েছে তা সমাধানের কোনাে তত্ত্ব ছিল না। এ সময়ে সামাজিক সমস্যা সমাধানে তিনি সমাজতাত্ত্বিক মতবাদের প্রয়ােগ ঘটান। পরে অবশ্য তিনি ইংল্যান্ডে চলে আসেন এবং ব্রিটিশ সমাজবিজ্ঞানে অবদান রাখেন।
৫.কার্ল মার্কসের দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ?
যেসব দার্শনিক তাত্ত্বক আলােচনা দ্বারা
মানুষের চিন্তা ও কর্মজগৎকে সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছেন কার্ল মার্কস তাদের মধ্যে অন্যতম। সমাজকে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণে দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ তত্ত্বটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব হিসেবে বিবেচিত হয়। এ তত্ত্বে মার্কস ব্যাখ্যার চেষ্টা করেন যে, বস্তুজগৎ সর্বদা পরিবর্তনশীল ও গতিময়, বস্তুজগতের পরিবর্তন ও বিকাশ হলাে প্রকৃতির অন্তর্নিহিত স্ববিরাধী পরিণতি।