What is evolution? Discuss the theory of evolution. evaluate the contribution of evolution to the development of anthropology.
বিবর্তনবাদ কী? বিবর্তনবাদ তত্ত্বটি আলোচনা কর। অথবা, নৃবিজ্ঞান বিকাশে বিবর্তনবাদের অবদান মূল্যায়ন কর।
ভূমিকা : বিবর্তনবাদ নৃবিজ্ঞানের প্রেক্ষিতগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি প্রেক্ষিত। নৃবিজ্ঞানের প্রেক্ষিতগুলো মানব সম্পর্কিত জ্ঞানের নানাদিক সম্পর্কে অবগত হতে সাহায্য করে। মানুষ বিভিন্ন পরিবেশ অনুযায়ী বিভিন্ন আচরণ করে থাকে। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী কোন পরিস্থিতিতে কোন আচরণ করে, কোন প্রেক্ষিতে এ আচরণ করে। এ সম্পর্কে নৃবিজ্ঞান জানার চেষ্টা করে। আর এ জানার উপায় বা পন্থা হিসেবে প্রেক্ষিত বা দৃষ্টিভঙ্গিগুলো অন্যতম ভূমিকা পালন করে। আর বিবর্তনবাদও তেমনি একটি প্রেক্ষিত। যার মধ্যে ধারাবাহিক পরিবর্তনের ফশ্রুতি বিদ্যমান a
বিবর্তনবাদ : বিবর্তনবাদ জীববিজ্ঞানের একটি প্রত্যয়। জীববিজ্ঞানের প্রত্যয় হলো এটি মানব সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা করে বিধায় তা নৃবিজ্ঞানেরও একটি অন্যতম প্রেক্ষিত। এ তত্ত্বে ডারউইনের অবদান অনবদ্য। তিনি তাঁর "The Origin of Speciaes' এবং 'The Descent of Man' গ্রন্থে এর বিশদ বর্ণনা দেন।
বিবর্তনবাদ হলো জৈবিক ও সামাজিক প্রপঞ্জসমূহের মধ্যে ক্রমপরিবর্তনের ধারণা। সমাজ সদা পরিবর্তনশীল অর্থাৎ সমাজ ও সংস্কৃতি ক্রমপরিবর্তনশীল এবং বিভিন্ন যুগে একই এলাকায় সমাজ একই রকম থাকে না। সমাজের এরূপ ক্রম রূপান্তরের বা পরিবর্তনের তত্ত্বকে বিবর্তনবাদ বলে। বিবর্তনবাদ তত্ত্ব মতে, একটি প্রজাতি বা একটি বিশিষ্ট জনসমষ্টি কাঠামোগতভাবে যে ক্রম পরিবর্তিত হয় তাকে বুঝায়।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা:
বিবর্তনবাদ সম্পর্কে সি.পি. কোটাক (C. P. Kottak) বলেন, "Descent with modification: Change in form over generations"
বিবর্তনবাদ সম্পর্কে আর.টি. শেফার ও আর.পি. লাম (R. T . Schacfer & R. P. Lamn) বলেন, "Evoluation theory is a theory of social change which holds that society 1 is moving in a definite direction."
প্রখ্যাত মনীষী গোল্ড ও কব (Gould & Kotb) তাঁদের 'A Dictionary of the Social Sciences' গ্রন্থে বলেন, Cultural evoluation is the application of the general theory of evoluation of cultural phenomena."
সুতরাং বিবর্তনবাদ হলো জীবনের ক্রমরূপান্তর বা পরিবর্তনগত । ধারণা বা তত্ত্ব। আর এরূপ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে নৃবিজ্ঞান সমাজ ও সংস্কৃতির পরিবর্তনকে বুঝায়।
● বিবর্তনবাদ : বিবর্তনবাদ মানবীয় সত্তার ক্রমবিকাশে প্রভাব বিস্তারকারী উপাদান সমাজ, সামাজিক সংস্কৃতি, মানবজীবন কাঠামোর প্রয়োজন বা চাহিদা প্রভৃতির পরিবর্তনের মাধ্যমে জীবের যে ক্রমরূপান্তর হয়ে থাকে তার ধারণা ও তত্ত্বকে বুঝায়। এ তত্ত্ব মতে, একটি প্রজাতির সমষ্টি কাঠামোগতভাবে যে ক্রম। পরিবর্তন হয় তা পরিবেশের সাথে আন্তঃক্রিয়ার মাধ্যমে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বংশগতি ও পরিবেশ কোনটির ভূমিকা কতখানি এ নিয়ে বিবর্তনবাদ সিদ্ধান্ত দেয় যে, পরিবেশ ও প্রতিবেশীর সাথে জীবের অধিকতর উপযোগী হয়ে ওঠার ফলশ্রুতি হলো বিবর্তনবাদ।
মর্গান বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যায় একসূত্রীয় নীতির প্রয়োগ করেন। তিনি বলেন, বন্য দশার নিম্ন পর্যায়ে মানুষ অন্য প্রাণী থেকে কিছুটা আলাদা ছিল। আবার মধ্য পর্যায়ে মানুষ শিকার ও আগুনের ব্যবহার শুরু করে। উচ্চ পর্যায়ে তিরধনুকের প্রচলন শুরু হয়। এ পর্যায়ের প্রান্তভাগে মাটির জিনিস ও শিল্পকর্ম তৈরি করতে শিখে।
বর্বর দশার প্রথম পর্যায়ে শুরু হয় মুৎশিল্প দিয়ে এবং শেষ হয়। পশুপালন ও চাষাবাদের মাধ্যমে। দ্বিতীয় বা মধ্যম পর্যায়ে পশুপালন ও চাষাবাদ দিয়ে শুরু হয় কিন্তু শেষ হয় পাথর, লৌহ ও অন্যান্য দ্রব্যসামগ্রীর ব্যবহার দিয়ে। উচ্চ পর্যায়ে বা তৃতীয় পর্যায়ে মানুষ সৌহ ও পাথরে বর্ণমালা ও লেখালেখির আবিষ্কার। করলে সত্যযুগের সূত্রপাত হয়। আর এভাবে মর্গান মানব বিবর্তনের কথা বর্ণনা করেন।
বিবর্তনবাদের বৈশিষ্ট্য : বিবর্তনবাদের কতকগুলো বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে যথ
১. এটি একটি নিরবচ্ছিন্ন ও বিরতিহীন এবং পরিবর্তনমুখী প্রক্রিয়া।
২. এ পরিবর্তন মানুষের আচার আচরণের সহজ রূপ কঠির রূপে নিয়ে যায়।
৩. ডারউইনবাদের বিবর্তন ছাড়াও পরিকল্পিত সহযোগিতা ও সমন্বয়ের ভিত্তিতে পরিবর্তন ঘটে থাকে।
৪. এর কোনো নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থল নেই, তাই এটি একমুখীবি বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যায় টেইলর বলেন, "ব্যক্তি বিশেষের প্রেত পূজা থেকে যে ধর্মের সৃষ্টি হয় তা প্রকৃতির বিভিন্ন বস্তুতে প্রেত আরোপ করে বহু ঈশ্বরবাদের জন্ম দেয়। পরে তা ক্রমান্বয়ে একেশ্বরবাদে বিবর্তিত হয়।"
অন্যদিকে, বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যায় A, C, Haddon বলেন, শিল্পকলা ও অঙ্কন প্রণালির বিবর্তনবাদ ছবি অঙ্কন বাস্তব মূর্তি তৈরি থেকে রেখা অঙ্কন প্রশালি অতিক্রম করে প্রতীক বা বিমূর্ত অঙ্কন বিবর্তিত হয়েছে।
বিবর্তনবাদীরা সংস্কৃতির খন্ড ইতিহাস রচনা করলেও সাংস্কৃতিক বিকাশে এর গুরুত্ব অত্যধিক। বিবর্তনবাদ একটি অচল ধারণা নয়। । তাইতো বিবর্তনবাদের সমালোচক লোঈ বলেন, "Evoluation is very for from dead and our duty is merely to define it with a greater precision."
কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে নয়া বিবর্তনবাদীরা একসূত্র নীতি পরিহার করে সংস্কৃতির সর্বজনীন ব্যাখ্যা দেন বিবর্তনবাদীগণ। যেমন নব্য বিবর্তনবাদের সংস্কৃতির ব্যাখ্যায় Gould & Kolb বলেন, "সংস্কৃতির পর্যালোচনায় বিবর্তনের সাধারণ তত্ত্বের প্রয়োগ হলো সাংস্কৃতিক বিবর্তন।
গর্ডন চাইল্ড নব্য বিবর্তনবাদে মানবসমাজের প্রথম যুগে মর্গানের বন্য দশা, প্রত্নতাত্ত্বিকদের প্রাচীন প্রস্তর যুগকে প্লেইসটোসিন । যুগের সমকালীন বলে অভিমত দেন। তিনি মানব সভ্যতার দ্বিতীয় স্তরটি মর্গানের বর্বর ও প্রত্নতাত্ত্বিকদের নব্য প্রস্তর যুগের । সমসাময়িক। মানবসমাজের তৃতীয় স্তরটি গর্ডন চাইল্ড বিপ্লবী বলে উল্লেখ করেন। সে সময়ে তিনি তাম্র, ব্রোঞ্জ, লৌহ, সামন্তবাদ ও বুর্জোয়া অর্থনীতির উপস্থিতি দেখিয়েছেন।
জুলিয়ান এইচ, স্টুয়ার্ড বিবর্তনবাদের সংস্কৃতির বিবর্তনকে সমর্থন করে বলেন, “সংস্কৃতির প্রকৃতরূপ নির্ভর করে প্রাকৃতিক পরিবেশ, প্রযুক্তির স্তর এবং সমাজের কর্মের ওপর।" তিনি বলেন, সমাজের বিবর্তন একক ধারায় নয়, বহু ধারায় গতিশীল। তবে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রযুক্তির স্তর একই হলে বিবর্তনও একই রূপের হবে।"
লেসলি এ. হোয়াইট নব্যবাদী বিবর্তনের ব্যাখ্যায় বলেন, ! "সংস্কৃতির ক্রমোন্নতি নির্ভর করে তেজের (Energy) পরিবর্তনে তা ব্যবহার করে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি, লোকসংখ্যা বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন আনা সম্ভব।”